বিশেষ প্রতিবেদন।
টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মানব পাচাররোধে এত তৎপরতার মধ্যেও সাগরপথে অবৈধভাবে বিদেশ পাড়ি দেওয়া থামানো যাচ্ছেনা। বঙ্গোপসাগরে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার ডুবির ঘটনায় কোস্টগার্ড অভিযান চালিয়ে মৃত অবস্থায় ২০জন রোহিঙ্গা নারী, ৪জন শিশু এবং জীবিত ৭০জনসহ মোট ৮৫জনকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় এই মৃতদেহ এবং জীবিত উদ্ধারের সংখ্যা বাড়তে পারে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১১ ফেব্রæয়ারী (মঙ্গলবার) ভোরে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পূর্বজোনের সেন্টমার্টিন বিসিজি ক্যাম্পের একটি দল বাহারছড়া উপকূল হয়ে ছেড়ে আসা ২টি ট্রলার অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার কারণে সেন্টমার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের অদূরে দূঘর্টনার কবলে পড়ে ডুবে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে উদ্ধার অভিযানে যায়। এসময় ১টি ট্রলার ডুবে গেলেও অপর ১টি ট্রলার এবং সাগর হতে ভাসমান ১১জন নারী, ৪জন শিশুর মৃতদেহ এবং ৭০জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে জীবিত উদ্ধার করে সেন্টমার্টিন জেটিতে আনা হয়।
উদ্ধারকৃতরা জানায়, তাদের সাথে ১শ ৫০জন যাত্রী ছিল বলে জীবিতরা জানান। উদ্ধারকৃত এসব রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষেরা উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পের বলে জানা গেছে। কোস্টগার্ডের অপর একটি আভিযানিক দল ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার এবং সাগরে জীবিত বা মৃতদেহ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তাই মৃতদেহ বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা রয়েছে।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পূর্বজোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেঃ কমান্ডার শুভাশিস দাস জানান, এখনো পর্যন্ত ১৫জন মৃত এবং ৭০জনকে জীবিত উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অভিযান অব্যাহত থাকায় এই ব্যাপারে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
মানব পাচারের জন্য রোহিঙ্গা মওজুদের সংবাদ পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নেতৃত্বে পুলিশের শক্তিশালী কয়েকটি দল উপকূলীয় এলাকায় সাড়াঁশি অভিযান শুরু করেছে।
এদিকে মানব পাচার দমনে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা জোর প্রচারণা চালালেও টেকনাফ সদরের লম্বরী, হাবিরছড়া, মিঠাপানিরছড়া, বাহারছড়ার নোয়াখালী পাড়া, জুম্মাপাড়া, কচ্চপিয়া, বাঘঘোনা বাজারসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে চিহ্নিত কতিপয় প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তির সাথে সখ্যতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রহস্যজনকভাবে মানব পাচারের উৎসব চালাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান।