রামু প্রতিনিধি
দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় পর্যন্ত রামুর শতাধিক মানুষের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে অনেক অসহায় হতদরিদ্র পরিবারকে বাড়ি ভিটা ছাড়া করে সর্বস্বান্ত করেছে আবদুল মাজেদ চৌধুরী নামে এক ভূমিদস্যু। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, অবশেষে ভূমিদস্যু মামলাবাজ আবদুল মাজেদ চৌধুরী কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । মামলাবাজ আবদুল মাজেদ চৌধুরী কে গ্রেফতার করার কারণে পুলিশ কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রামুর সাধারণ জনগণ ও সুশীল সমাজ, এলাকাবাসী করেছে মিষ্টি বিতরণ। গত ৯ই মার্চ বেলা ১১ টার সময় পারিবারিক বাড়ি ভিটার বিরোধ কে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বসত ঘরের উঠানে কাজ করা কালে জান্নাত আরা বেগম (৫৭) নামে এক মহীয়ষী নারী কে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে ছিরাই কাঠের বাঠাম দিয়ে মারধর করে গুরুতর হাঁড়ভাঙ্গা জখম করে, এলোপাতাড়ি ভাবে মারধরের কারনে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা ও থেঁতলানো জখম হয়। জান্নাত আরা বেগম কে মারধরের খবর শুনে এলাকাবাসী ভূমিদস্যু আবদুল মাজেদ চৌধুরীর কবল থেকে উদ্ধার করে দ্রুত রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রুগীর অবস্থা অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত ডাক্তার কক্সবাজার সদর হাসপাতালে জরুরী ভিত্তিতে হস্তান্তর করে।
জান্নাত আরা বেগম রামু ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের তিন বারের নির্বাচিত সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম আবদুল মালেক চৌধুরীর ( ভূলু চৌধুরী) সহধর্মিনী। রামু অফিসের চর লামার পাড়া এলাকার বিশিষ্ট জমিদার মরহুম সুলতান আহাম্মদ চৌধুরীর পুত্রবধূ। আহত জান্নাত আরা বেগমের বড় ছেলে প্রকৌশলী সোহরাব চৌধুরী (জিকু) ও ছোট ছেলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে কর্মরত সার্জেন্ট এস,এম, সোহেল চৌধুরী চাকরির সুবাদে চট্টগ্রামে থাকার কারনে মামলাবাজ আবদুল মাজেদ চৌধুরী এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। মাকে মারধরের খবর শুনে রামুতে এসে ছেলে প্রকৌশলী সোহরাব চৌধুরী (জিকু) বাদী হয়ে রামু থানায় আবদুল মাজেদ চৌধুরী কে অভিযুক্ত করে নিয়মিত মামলা দায়ের করেন।রামু থানার মামল নম্বর ১১/২০২৩। মামলার বাদী প্রকৌশলী সোহরাব চৌধুরী (জিকু) জানান আমরা দুই ভাই চাকরির সুবাদে চট্টগ্রামে থাকি বাড়িতে আমার মা ও আমার সহধর্মিনী বসবাস করে।
দীর্ঘ দিন পর্যন্ত আবদুল মাজেদ চৌধুরী আমাদের পরিবারের উপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে । আমাদের পরিবারের অনেক জমি জমা অবৈধ ভাবে দখল করার জন্য আবদুল মাজেদ চৌধুরী মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা দিয়ে ভোগাচ্ছে । বাড়িতে আমরা কোন পুরুষ লোক না থাকার সুবাদে আমার জন্মদাতা মাকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। এছাড়াও রামুর শত শত মানুষের জায়গা জমির মিথ্যা মামলা দিয়ে দখল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শতাধিক মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলও খাটিয়েছে।
এলাকাবাসী জানান মানুষ কে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে জায়গা জমি কেড়ে নেওয়া আবদুল মাজেদ চৌধুরীর একমাত্র নেশা, আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। মামলাবাজ আবদুল মাজেদ চৌধুরীর ছেলে সাদেক চৌধুরী ( মুন্না) ও সাবিক চৌধুরী দু’জনই মাদক সম্রাট।
সাদেক চৌধুরী প্রকাশ মুন্না এলাকার বিভিন্ন লোকজন থেকে জমি বিক্রি করবে ও দখল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে খালি চেক প্রদান করে প্রতিনিয়ত লোকজনকে প্রতারিত করে আসতেছে । রামু-কক্সবাজারের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়ায় মাদক সম্রাট সাদেক চৌধুরী প্রকাশ মুন্না রামু থানাতে কোন বিচার প্রার্থীর লোকজন আসলে কৌশল অবলম্বন করে বিচারের রায় পক্ষে নিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দালালি করে অবৈধভাবে অনেক লোকজন হতে টাকা আত্মসাত করে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের নাকের ডগায় থানার সামনে দালালি করলেও এই মাদক সম্রাট সাদেক চৌধুরী প্রকাশ মুন্নাকে রহস্যজনক কারণে গ্রেফতার করছে না পুলিশ।
আবদুল মাজেদ চৌধুরীর অপর ছেলে মাদক সম্রাট সাবিক চৌধুরী নিজ এলাকা অফিসের চর ও লামার পাড়ায় মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ইয়াবা ও গাজা লুটের ঘটনাও। এলাকায় জনশ্রুতি আছে রামু থানার প্রশাসন কে ম্যানেজ করে ইয়াবা ও গাঁজার রমরমা ব্যবসা করছে বলে প্রচার করছে মাদক সম্রাট সাবিক চৌধুরীর পিতা আবদুল মাজেদ চৌধুরী । সাম্প্রতিক সময়ে এর ভয়াবহতা ভয়ংকর আকার ধারন করেছে। হাত বাড়ালে অতি সহজে মিলছে ইয়াবা ও গাজা। ইয়াবা ও গাজার নেশায় বিভিন্ন শ্রেণীর – পেশার মানুষের পাশাপাশি আসক্ত হয়ে পড়েছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। কক্সবাজার জেলা জুড়ে পুলিশের বড় ধরনের রদবদলের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আবারো উল্লেখযোগ্য হারে ইয়াবা ব্যবসা বেড়ে গেছে রামু উপজেলায়। বিশেষ করে রামু ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের লামার পাড়া, অফিসেরচর,ফকিরা বাজার, উপজেলার প্রধান বানিজ্যি স্টেশন চৌমুহনী ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে আশঙ্কাজনক হারে রমরমা ইয়াবা ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাদক সম্রাট
সাদেক চৌধুরী ( মুন্না) ও সাবিক চৌধুরী দু’জনকেই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য দাবি জানান এলাকাবাসী। রামু থানার সাব ইন্সপেক্টর নাজমূল হাসানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি আবদুল মাজেদ কে গ্রেফতারের বিষয় স্বীকার করেন। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে পরবর্তীতে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান।